Search This Blog

পদ প্রকরণ (পর্ব ১): পদ পদের প্রকারভেদ বিশেষ্য পদ বিশেষণ পদ নির্ধারক বিশেষণ বিশেষণবাচক ‘কী’ বিশেষণ সম্বন্ধ বিশেষণের অতিশায়ন (degree) সর্বনাম পদ সাপেক্ষ সর্বনাম সর্বনামের পুরুষ [PERSON] অব্যয় পদ অব্যয়ের প্রকারভেদ কিছু বিশেষ অব্যয় অনুকার বা ধ্বন্যাত্মক অব্যয় অনুসর্গ অব্যয় অনন্বয়ী অব্যয় সমুচ্চয়ী অব্যয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন পদ : বাক্যে ব্যবহৃত প্রতিটি শব্দকে পদ বলে। বাক্যে যখন শব্দ ব্যবহৃত হয়, তখন শব্দগুলোর মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টির জন্য প্রতিটি শব্দের সঙ্গে কিছু অতিরিক্ত শব্দাংশ যুক্ত হয়। এগুলোকে বলে বিভক্তি। যে সব শব্দে আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় কোন বিভক্তি যুক্ত হয়নি, সে সব শব্দেও একটি বিভক্তি যুক্ত হয়। একে প্রথমা বিভক্তি বা শূণ্য বিভক্তি বলে। ব্যাকরণ অনুযায়ী কোন শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হলে তাতে বিভক্তি যুক্ত হতে হয়। আর তাই কোন শব্দ বাক্যে বিভক্তি না নিয়ে ব্যবহৃত হলেও তার সঙ্গে একটি বিভক্তি যুক্ত হয়েছে বলে ধরে নিয়ে তাকে শূণ্য বিভক্তি বলা হয়। অর্থাৎ,বিভক্তিযুক্ত শব্দকেই পদ বলে। পদের প্রকারভেদ : পদ প্রধানত ২ প্রকার- সব্যয় পদ ও অব্যয় পদ। সব্যয় পদ আবার ৪ প্রকার- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম ও ক্রিয়া। অর্থাৎ,পদ মোট ৫ প্রকার- ১. বিশেষ্য ২. বিশেষণ ৩. সর্বনাম ৪. ক্রিয়া ৫. অব্যয় [শব্দের শ্রেণীবিভাগ হলো- তৎসম, অর্ধ-তৎসম, তদ্ভব, দেশি ও বিদেশি। অন্যদিকে পদের শ্রেণীবিভাগ হলো- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, ক্রিয়া ও অব্যয়। দুইটিই ৫ প্রকার।] যখন পর্যন্ত কোন শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হচ্ছে না, তখনো সেটি কোন পদ নয়। কোন শব্দ কোন পদ হবে তা নির্ভর করে বাক্যে কিভাবে ব্যবহৃত হলো তার উপর। তাই কোন শব্দকে আগেই বিশেষ্য বা বিশেষণ বলে দেয়া ঠিক নয়। যেমন- তোমারহাতেকি? ডাকাত আমার সবহাতিয়েনিয়েছে। জঙ্গীরাহাতবোমা মেরে পালিয়ে গেলো। প্রথম বাক্যে হাত শব্দটি বিশেষ্য। আবার দ্বিতীয় বাক্যে এই হাত শব্দটিই একটু পরিবর্তিত হয়ে ক্রিয়া হয়ে গেছে। আবার তৃতীয় বাক্যেই আবার হাত শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে বিশেষণ হিসেবে। [তবে প্রশ্নে শুধু শব্দ দিয়ে সেটি কোন পদ জিজ্ঞেস করলে সাধারণত শব্দটি যে পদ হিসেবে ব্যবহৃত হয় সেটি দিতে হবে। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, প্রতিটি শব্দই সাধারণত একেক পদ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সময় একেক রূপ নেয়। যেমন, ‘হাত’ শব্দটি বিশেষণ হিসেবে কোন বিভক্তি নেয়নি, কিন্তু বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সময় বিভক্তি নিয়েছে। আবার ক্রিয়া হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার সময় প্রত্যয় নিয়েছে। এভাবেপ্রশ্নের শব্দটিকে বিভিন্ন বাক্যে ব্যবহার করে কোন পদ নির্ণয় করা যেতে পারে।] বিশেষ্য পদ কোন কিছুর নামকেই বিশেষ্য বলে। যে পদ কোন ব্যক্তি, বস্ত্ত, প্রাণী, সমষ্টি, স্থান, কাল, ভাব, কর্ম, গুণ ইত্যাদির নাম বোঝায়, তাকে বিশেষ্য পদ বলে। বিশেষ্য পদ ৬ প্রকার- ১. নামবাচক বা সংজ্ঞাবাচক বিশেষ্য (ক) ব্যাক্তির নাম : নজরুল, ওমর, আনিস, মাইকেল (খ) ভৌগোলিক স্থানের নাম : ঢাকা, দিলিল, লন্ডন, মক্কা (গ) ভৌগোলিক নাম (নদী, পর্বত, সমুদ্র ইত্যাদির নাম) : মেঘনা, হিমালয়, আরব সাগর (ঘ) গ্রন্থের নাম : গীতাঞ্জলি, অগ্নিবীণা, দেশেবিদেশে, বিশ্বনবী ২. জাতিবাচক বিশেষ্য : (এক জাতীয় প্রাণী বা পদার্থের নাম) মানুষ, গরু, গাছ, পাখি, পর্বত, নদী, ইংরেজ ৩. বস্তুবাচক বা দ্রব্যবাচক বিশেষ্য : বই, খাতা, কলম, থালা, বাটি, মাটি, চাল, চিনি, লবন, পানি ৪. সমষ্টিবাচক বিশেষ্য (ব্যক্তি বা প্রাণীর সমষ্টি) : সভা, জনতা, পঞ্চায়েত, মাহফিল, ঝাঁক, বহর, দল ৫. ভাববাচক বিশেষ্য (ক্রিয়ার ভাব বা কাজের ভাব বা কাজের নাম বোঝায়) : গমন, শয়ন, দর্শন, ভোজন. দেখা, শোনা, যাওয়া, শোয়া ৬. গুণবাচক বিশেষ্য : মধুরতা, তারল্য, তিক্ততা, তারুণ্য, সৌরভ, স্বাস্থ্য, যৌবন, সুখ, দুঃখ বিশেষণ পদ যে পদ বাক্যের অন্য কোন পদের দোষ, গুণ, অবস্থা, সংখ্যা, পরিমাণ ইত্যাদি প্রকাশ করে, তাকে বিশেষণ পদ বলে। অর্থাৎ, বিশেষণ পদ অন্য কোন পদ সম্পর্কে তথ্য বা ধারণা প্রকাশ করে, বা অন্য পদকে বিশেষায়িত করে। [কিছু বিশেষণ পদ : (‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতা থেকে) সফেদদেয়াল শান্তফটোগ্রাফ জিজ্ঞাসুঅতিথি ছোটছেলে নিস্পৃহকণ্ঠস্বর তিনটিবছর (সংখ্যাবাচক বিশেষণ) রুক্ষচর প্রশ্নাকুলচোখ ক্ষীয়মাণশোক সহজেহয়ে গেল বলা (ক্রিয়া বিশেষণ)] [বিশেষণ শব্দ; ভাষা অনুশীলন; একটি ফটোগ্রাফ] বিশেষণ পদ ২ প্রকার- নাম বিশেষণ ও ভাব বিশেষণ। নাম বিশেষণ : যে বিশেষণ পদ কোন বিশেষ্য বা সর্বনাম পদকে বিশেষায়িত করে, অর্থাৎ অন্য কোন পদ সম্পর্কে কিছু বলে, তাকে নাম বিশেষণ বলে। যেমন- *.বিশেষ্যের বিশেষণ :নীলআকাশ আরসবুজমাঠের মাঝ দিয়ে একটিছোট্টপাখি উড়ে যাচ্ছে। *.সর্বনামের বিশেষণ : সেরূপবানওগুণবান। ভাব বিশেষণ : যে বিশেষণ পদ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদ ছাড়া অন্য কোন পদকে বিশেষায়িত করে, অর্থাৎ অন্য কোন পদ সম্পর্কে কিছু বলে, তাকে ভাব বিশেষণ বলে। ভাব বিশেষণ ৪ প্রকার- *.ক্রিয়া বিশেষণ :ধীরে ধীরেবায়ু বয়।পরেএক বার এসো। *.বিশেষণের বিশেষণ (কোন বিশেষণ যদি অন্য একটি বিশেষণকেও বিশেষায়িত করে, তাকে বিশেষণের বিশেষণ বলে) : *.নাম বিশেষণের বিশেষণ :সামান্যএকটু দুধ দাও। এ ব্যাপারে সেঅতিশয়দুঃখিত। *.ক্রিয়া বিশেষণের বিশেষণ : রকেটিঅতিদ্রুত চলে। *.অব্যয়ের বিশেষণ (অব্যয় পদ বা অব্যয় পদের অর্থকে বিশেষায়িত করে) : ধিক তারে,শতধিক নির্লজ্জ যে জন। *.বাক্যের বিশেষণ (কোন পদকে বিশেষায়িত না করে সম্পূর্ণ বাক্যটিকেই বিশেষায়িত করে) :দুর্ভাগ্যক্রমেদেশ আবার নানা সমস্যাজালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছে।বাস্তবিকইআজ আমাদের কঠিন পরিশ্রমের প্রয়োজন। [না-বাচক ক্রিয়া বিশেষণ : নি- *.এখনো দেখনিতুমি? *.ফুল কি ফোটেনিশাখে? *.পুষ্পারতি লভেনিকি ঋতুর রাজন? রাখিনিসন্ধান *.রহেনি, সে ভুলেনিতো না- *.বসন্তে বরিয়া তুমি লবেনাকি তব বন্দনায়? *.রচিয়া লহনাআজও গীতি। *.ভুলিতে পারিনাকোন মতে। নাই- *.শুনিনাই, রাখি নি সন্ধান *.নাইহল, না হোক এবারে *.করেনাইঅর্ঘ্য বিরুন?] [না-বাচক ক্রিয়া বিশেষণ; ভাষা অনুশীলন; তাহারেই পড়ে মনে]