Search This Blog

শুক্র গ্রহ (পর্ব ২ ও শেষ পর্ব): কক্ষীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ [সম্পাদনা] কক্ষপথ[সম্পাদনা] সব গ্রহের কক্ষপথ উপবৃত্তাকার হলেও শুক্রের কক্ষপথ প্রায় গোলাকার। এর উৎকেন্দ্রিকতাশতকরা এক ভাগেরও কম। যেহেতু সূর্য থেকে শুক্রের দূরত্ব পৃথিবীর চেয়ে কম, সেহেতু পৃথিবীর দিক থেকে সূর্য উদিত হয় (সূর্যের বৃহত্তমপ্রতানহচ্ছে ৪৭.৮ ডিগ্রী) শুক্রও প্রায় একই দিক থেকে উদিত হয়। এজন্য এই গ্রহটিকে কেবল সূর্যোদয়ের কয়েক ঘণ্টা আগে এবং সূর্যাস্তের কয়েক ঘণ্টা পরে দেখা যায়। অবশ্য যখন শুক্র তার উজ্জ্বলতম অবস্থায় থাকে তখন দিনের বেলায়ও একে দেখা যায়। আসলেচাঁদছাড়া শুক্র গ্রহই একমাত্র জ্যোতিষ্কযা পৃথিবীর আকাশ থেকে রাত এবং দিন উভয় সময়েই দেখা যায়। অবশ্য ক্ষেত্রবিশেষে কিছুনবতারারাত ও দিন উভয় সময়ে দেখা যায়। যেমন,কাঁকড়া নীহারিকা সৃষ্টিকারী নবতারা। যাহোক অন্ধাকার আকাশে দৃশ্যমান শুক্র গ্রহ দেখাতে অনেকটাই তারার মত জ্বলজ্বলে হয়ে থাকে। পরপর দুটি সর্বোচ্চপ্রতানেরমধ্যবর্তী চক্রটির সময়কাল ৫৮৪ দিন। এই ৫৮৪ দিন পর শুক্র গ্রহকে পূর্বে যে অবস্থানে দেখা যেত তার সাথে ৭২ ডিগ্রী কোণ করে অবস্থান করতে দেখা যায়। যেহেতু ৫ * ৫৮৪ = ২৯২০ = ৮ * ৩৬৫ সেহেতু দেখা যাচ্ছে শুক্র গ্রহ প্রতি ৮ বছর পরপর (লীপ ইয়ারের দুই দিন বাদে) তার আগের অবস্থানে ফিরে আসে। এই চক্রটি প্রাচীনগ্রিক সভ্যতায়সোথিক্‌স চক্রনামে পরিচিত ছিল এবংমায়া সভ্যতারনিকটও তা সুপরিচিত ছিল। চাঁদের সাথেও এর একটি সম্পর্ক রয়েছে, যেমন: ২৯.৫ * ৯৯ = ২৯২০.৫; অর্থাৎ এই সময়কালটি প্রায় ৯৯ টি চন্দ্রমাসেরসমান। গ্রহটিরঅন্তঃসংযোগেরসময় শুক্র অন্য যেকোন গ্রহের তুলনায় পৃথিবীর সবচেয়ে নিকটে আসে; তখন এ থেকে পৃথিবীর দূরত্ব হয় চাঁদথেকে পৃথিবীর গড় দূরত্বের প্রায় ১০০ গুণ। ১৮০০সালের পর থেকে শুক্র গ্রহ পৃথিবীর সবচেয়ে কাছে পৌঁছেছিল১৮৫০সালের১৬ ডিসেম্বর তারিখে। কখন তাদের মধ্যে দূরত্ব ছিল: ০.২৬৪১৩৮৫৪জ্যোতির্বিজ্ঞান একক= ৩৯,৫৪১,৮২৭ কিলোমিটার। ২১০১সালেরডিসেম্বর ১৬তারিখের পূর্ব পর্যন্ত এটিই হবে শুক্র থেকে পৃথিবীর সর্বনিম্ন দূরত্ব। উক্ত তারিখে গ্রহদ্বয়ের মধ্যবর্তী দূরত্ব দাড়াবে ০.২৬৪৩১৭৩৬ জ্যোতির্বিজ্ঞান একক= ৩৯,৫৪১,৫৭৮ কিলোমিটার। ঘূর্ণন[সম্পাদনা] শুক্রেরপ্রতীপ গতিবেশ ধীর, এটি পূর্ব থেকে পশ্চিমে ঘুরে যেখানে অন্যান্য অধিকাংশ গ্রহই পশ্চিম থেকে পূর্বে ঘুরে থাকে। অবশ্য প্লুটোএবংইউরেনাস গ্রহেরওপ্রতীপ গতি রয়েছে। শুক্রের এই ধীর প্রতীপ গতির কারণ হিসেবে ধরা হয়, জোয়ার বল,ঘর্ষণএবং শুক্রের পুরু পরিবেশ সূর্যের মাধ্যমে অতি উত্তপ্ত হওয়া। যদি শুক্র থেকে সূর্য দেখা যেত তবে শুক্রের আকাশে তা পশ্চিম দিকে উদিত হয়ে পূর্বে অস্ত যেত। এর আহ্নিক গতি হচ্ছে পৃথিবীর ১১৬.৭৫ দিনের সমান এবং একটি শুক্রীয় বছরের স্থায়িত্বকাল হচ্ছে ১.৯২ শুক্রীয় দিবস। একবার সম্পূর্ণভাবে নিজের কক্ষপথ বেয়ে সূর্যকে পরিভ্রমণ করতে শুক্র গ্রহের সময় লাগে ২২৫ দিন। শুক্র তার নিজ অক্ষে ঘোরে খুব ধীরগতিতে। শুক্রের ব্যাস ১২,১০৪ কিলোমিটার এবং ঘনত্ব ৫.০৬। এর এসকেপ ভেলোসিটি প্রতি সেকেন্ডে ৬.৫ মাইল। শুক্রগ্রহের উল্লেখযোগ্য কোনো চৌম্বকক্ষেত্রনেই। এই গ্রহের আবহমন্ডলের প্রায় সবটাই কার্বন-ডাই-অক্সাইডগ্যাস। এখানে মাত্র ০.৪ ভাগঅক্সিজেনগ্যাস রয়েছে। শুক্র গ্রহে কিছুনাইট্রোজেন,হাইড্রোজেন,এ্যামোনিয়াএবং নামমাত্র জলীয়বাষ্পের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত শুক্রগ্রহের খবরাখবর জানার জন্য বহু মহাকাশযান পাঠানো হয়েছে মহাকাশে। তাদের মধ্যে পাইওনিয়ার, ভেনাস- ১ ও ২ এবংভেনেরা ১১থেকে ১৪ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাইয়োনিয়ার মহাকাশযান শুক্রগ্রহের কাছ থেকে এমন সব ছবি তুলেছে যা থেকে শুক্রগ্রহে বিশাল পাহাড়, সমতলভূমি ও অনেক আগ্নেয়গিরি রয়েছে বলে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। শুক্র গ্রহের মোটামুটি একটা মানচিত্র পাইওনিয়ারের সূক্ষ জরিপের ফলে তৈরি করা সম্ভব হয়েছে।এছাড়া ভেনেরা-১১, শুক্র গ্রহের উপর নেমেছিল ১৯৭৮সালর২৫ ডিসেম্বরতারিখে। শুক্র গ্রহের অনেক ছবি পাঠিয়েছে এই মহাকাশযান।ভেনেরা-১৪ও ১৫ শুক্র গ্রহে নেমে চমৎকার রঙিন ছবি পাঠিয়েছে পৃথিবীতে। অবশ্য এর আগে ১৯৬৬সালের মার্চ মাসেভেনাস-৩শুক্রের উপরিভাগে বিধ্বস্ত হয়। বিজ্ঞানীরা ধারনা করেন শুক্রগ্রহে প্রাণের কোনো অস্তিত্ব নেই।

শুক্র গ্রহ (পর্ব ১): বিবরণ: বিশেষণVenusian অথবা মাঝেমাঝে Cytherean কক্ষপথের বৈশিষ্ট্য ইপকজে২০০০ এপhelion১০৮,৯৪১,৮৪৯ কিমি ০.৭২৮ ২৩১ ২৮ এইউ ৬৭,৬৯৩,৪৮৮ মাইল পেরিhelion১০৭,৪৭৬,০০২ কিমি ০.৭১৮ ৪৩২ ৭০ এইউ ৬৬,৭৮২,৬৫১ মাইল অর্ধ-মুখ্য অক্ষ১০৮,২০৮,৯২৬কিমি ০.৭২৩ ৩৩১ ৯৯এইউ ৬৭,২৩৯,০৭০ মাইল উৎকেন্দ্রিকতা০.০০৬ ৭৭৩ ২৩ যুতিকাল৫৮৩.৯২ দিন গড় কক্ষীয় দ্রুতি৩৫.০২০ কিমি/সে নতি৩.৩৯৪ ৭১° (সৌর বিষুবের সাথে ৩.৮৬°) উদ্বিন্দুর দ্রাঘিমা৭৬.৬৮০ ৬৯° উপগ্রহসমূহনেই ভৌত বৈশিষ্ট্যসমূহ বিষুবীয়ব্যাসার্ধ্য৬,০৫১.৯ কিমি (০.৯৫পৃথিবী) পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল৪.৬০×১০৮কিমি২ (০.৯০২ পৃথিবী) আয়তন৯.২৮×১০১১কিমি³ (০.৮৫৭ পৃথিবী) ভর৪.৮৬৮৫×১০২৪কেজি (০.৮১৫ পৃথিবী) গড়ঘনত্ব৫.২০৪গ্রাম/cm৩ বিষুবীয় পৃষ্ঠের অভিকর্ষ৮.৮৭মি/সে২ (০.৯০৪g) মুক্তি বেগ১০.৩৬ কিমি/s নাক্ষত্রিক ঘূর্ণনকাল−২৪৩.০১৮৫ দিন বিষুবীয় অঞ্চলে ঘূর্ণন বেগ৬.৫২ কিমি/ঘ (বিষুবে) এক্সিয়াল টিল্ট২.৬৪° উত্তর মেরুরবিষুবাংশ২৭২.৭৬° (১৮ ঘ ১১ মিন ২ সে)১ উত্তর মেরুরবিষুবলম্ব৬৭.১৬° অ্যালবেডো০.৬৫ পৃষ্ঠেরতাপমাত্রাminmeanmax পৃষ্ঠ তল৭৩৭ কে ৪৬৪ C (৮৬৭ ফ) ৭৭৩ কে ৫০০ C (৯৩২ ফ) Cloud tops২২৮কে -৪৫ C (-৪৯ ফ) বায়ুমণ্ডল পৃষ্ঠেরচাপ৯.২মেগা প্যাসকেল গঠন~৯৬.৫%কার্বন ডাই অক্সাইড ~৩.৫%নাইট্রোজেন .০১৫%সালফার ডাই অক্সাইড .০০৭%আর্গন .০০২%বাষ্প .০০১৭%কার্বন মনোক্সাইড .০০১২%হিলিয়াম .০০০৭%নিয়ন traceকার্বনিল সালফাইড traceহাইড্রোজেন ক্লোরাইড traceহাইড্রোজেন ফ্লোরাইড শুক্র গ্রহবাজোহ্‌রাসূর্যথেকে দূরত্বের দিক দিয়েসৌরজগতেরদ্বিতীয়গ্রহ। এইপার্থিব গ্রহটিকেঅনেক সময়পৃথিবীর"বোন গ্রহ"বলে আখ্যায়িত করা হয়, কারণ পৃথিবী এবং শুক্রের মধ্যে গাঠনিক উপাদান এবং আচার-আচরণে বড় রকমের মিল রয়েছে। এই গ্রহটি যখন সকাল বেলায় পৃথিবীর আকাশে উদিত হয় তখন একেলুসিফারবাশয়তাননামেও ডাকা হয়ে থাকে। বাংলায় সকালের আকাশে একেশুকতারাএবং সন্ধ্যার আকাশে একেসন্ধ্যাতারাবলে ডাকা হয়ে থাকে। এর কোনওউপগ্রহনাই। পরিচ্ছেদসমূহ ১নাম ২কক্ষীয় বৈশিষ্ট্যসমূহ ২.১কক্ষপথ ২.২ঘূর্ণন ৩বহিঃসংযোগ নাম [সম্পাদনা] শুক্র গ্রহের বাংলা নাম এসেছে অসুরদের গুরু ও রক্ষক শুক্রাচার্য থেকে, এবং শুক্রাচার্য এর দিন হিসেবে এসেছে শুক্রবার। শুক্র গ্রহেরলাতিননামকরণ করা হয়েছেরোমানপ্রেমের দেবীভিনাস(Venus, লাতিনে: উয়েনুস্‌, ইংরেজিতে: ভীনাস্‌) নামানুসারে। পৌরাণিক কাহিনীতে ভেনাস (শুক্র) ভালকানের স্ত্রী এবং দেবপুত্র কিউপিড ও দৈনিয়্যাসের মাতা। বর্তমানে শুক্রের বিশেষণ হিসেবে ইংরেজিতে ভেনুশিয়ান (Venusian) শব্দটি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এরলাতিনবিশেষণ হচ্ছে উয়েনেরেয়াল্‌ (Venereal), ইংরেজি উচ্চারণে ভেনিরিয়্যাল্‌ যা আধুনিক ইংরেজি ভাষায়যৌনরোগবোধক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই জন্য ভেনিরিয়্যাল শব্দটি এর বিশেষণ হিসেবে এখন ব্যবহৃত হয় না। অনেক জ্যোতির্বিজ্ঞানী এই গ্রহের নামের বিশেষণ হিসেবেসিথারিয়ান(Cytherean) শব্দটি ব্যবহার করেন যাগ্রিক পুরাণেউল্লেখিত দেবীআফ্রোদিতিরঅপর নামসিথারিয়াথেকে এসেছে। এছাড়া আরও কয়েকটি বিশেষণ হচ্ছে: ভেনারিয়ান (Venerean, Venarian), ভেনারান (Veneran) ইত্যাদি। চৈনিক,জাপানি,কোরিয়এবংভিয়েতনামিজ সংস্কৃতিতেএই গ্রহের নাম বলা হয়ধাতব তারা (金星) যা পৃথিবী সৃষ্টিকারী পাঁচটি মৌলিক উপাদানের নাম থেকে উৎসারিত।

পৃথিবী ও সৌরমন্ডল বা সৌরজগত্‍ প্রাককথন (পর্ব ২ ও শেষ পর্ব): পৃথিবীর গতি দুই প্রকার - (১) আবর্তন বা আহ্নিক গতি (Rotation) এবং (২)  পরিক্রমণ বা বার্ষিক গতি (Revolution ) আবর্তন বা আহ্নিক গতি (Rotation)- পৃথিবী তার অক্ষ বা মেরুদন্ডের উপর ভর করে নির্দিষ্ট গতিতে পশ্চিম থেকে পূর্বে অনবরত ঘুরে চলেছে । অহ্ন শব্দের অর্থ ‘দিন’। এই গতির ফলে দিনরাত্রি হয় হয় বলে একে আবর্তন বা আহ্নিক গতি বলে । পৃথিবীর আবর্তনগতিকে আহ্নিক গতিও বলা হয়। পৃথিবী নিজের অক্ষের ওপর একবার পাক খেয়ে আসতে যে সময় নেয় তার পরিমাণ একদিন বা প্রায় ২৪ ঘন্টা।   একদিন সূর্য যখন মাথার উপরে রয়েছে তখন থেকে সময় গণনা শুরু করে পরের দিন ঠিক সূর্য যখন মাথার ওপরে আসবে তখন পর্যন্ত যে সময় অতিবাহিত হয়েছে তা হল এক সৌর দিন। এর পরিমাণ ঠিক ২৪ ঘন্টা। কিন্তু মনে রাখতে হবে পৃথিবী তার আবর্তনের সাথে সাথে সূর্যের চারদিকে প্রদক্ষি্ণও করছে। তাই এক দিনে সে তার প্রদক্ষিণ পথ ধরে কিছুটা পার হয়েও এসেছে। তাই যদি আমরা কোনও নক্ষত্র বা নক্ষত্র মন্ডলীর সাপেক্ষে পৃথিবীর আবর্তনের সময় মাপি তা কিন্তু কিছুটা তফাত হবে। ধরা যাক একদিন রাত্রে একটি নক্ষত্রের উদিত হওয়ার মূহুর্ত থেকে পরের দিন আবার সেই নক্ষত্রটির উদিত হওয়ার সম য় মাপি দেখব এই সময় সৌর দিনের থেকে কিছুটা কম। একেই নক্ষত্র দিন বলে। একটা সৌর দিন থেকে একটা নক্ষত্র দিন ৩ মিনিট ৫৫. ৯১ সেকেন্ড কম। সৌরদিন (Solar day)-সূর্যকে সামনে রেখে পৃথিবী তার অক্ষের উপর ভর করে সম্পূর্ণরূপে একবার পাক খেতে ২৪ ঘন্টা সময় নেয় ।  একে‘সৌরদিন’বলে । নাক্ষত্রদিন(Solar day)-সুর্য ছাড়া অন্য কোনো নক্ষত্রের হিসাবে পৃথিবীর সম্পূর্ণ একবার আবর্তনের সময় লাগে ২৩ ঘন্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড একে নাক্ষত্রদিন(Solar day)বলে । Near Earth Object Danger Close to Earth একটি গ্রহাণুর আঘাত থেকে গত ২৭ জানুয়ারি অল্পের জন্য রক্ষা পেল পৃথিবী! ২০১২ বিএক্স৩৪ নামের গ্রহাণুটি খুব কাছাকাছি এসেও নিরাপদে পৃথিবীকে অতিক্রম করেছে। গ্রহাণুটি ছুটতে ছুটতে চাঁদের চেয়েও কম দূরত্বে পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে। মহাকাশ পর্যবেক্ষকেরা এ ঘটনাকে 'অল্পের জন্য রক্ষা'হিসেবে বর্ণনা করেছেন। 'গ্রহাণুটির ব্যাস ছয় থেকে ১৯ মিটারের মধ্যে ছিল। শুক্রবার গ্রিনিচ সময় তিনটার দিকে এটি পৃথিবীর ৬০ হাজার কিলোমিটারের কাছাকাছি চলে আসে। ' 'অল্পের জন্য এটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। এ পর্যন্ত পৃথিবীর খুব কাছাকাছি এসেছে এমন শীর্ষ ২০-এর তালিকায় এটি থাকবে। 'মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (নাসা) বৃহস্পতিবার টুইটারে জানায় ,গ্রহাণুটি'নিরাপদেই ২৭ জানুয়ারি পৃথিবী অতিক্রম করেছে। ' গেরেথ উইলিয়ামস ব্যাখ্যা করে বলেন,গ্রহাণুটি এতই ছোট ছিল যে,পৃথিবীর খুব কাছাকাছি আসার পরই কেবল তা শনাক্ত করা যায়। কিন্তু এর ওড়ার গতি বিস্ময়কর হলেও তা একেবারেই অস্বাভাবিক ছিল না। তবে গ্রহাণুটি পৃথিবীতে আছড়ে পড়লেও ক্ষতির আশঙ্কা ছিল না বলে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশের জন্য গ্রহাণুটির যে শক্তি ক্ষয় হতো এর ফলে এটি ভেঙে যেত। এর পরও পৃথিবীর মাটিতে গ্রহাণুটি প্রবেশে সক্ষম হলে বড়জোর এর আকৃতি হতো একটি ফুটবলের মতো। এর আগে গত বছর নভেম্বরে আরেকটি গ্রহাণু যার নাম ২০০৫ ওয়াইইউ ৫৫ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি চলে এসেছিল।

পৃথিবী ও সৌরমন্ডল বা সৌরজগত্‍ প্রাককথন (পর্ব ১): সৌরজগত্‍: সূর্য এবং তার চারপাশে ঘুরছে যে গ্রহ,উপগ্রহ,উল্কা,গ্রহাণু,ধুমকেতু তাদের নিয়েই হল সৌরজগত। এই সব জ্যোতিষ্কমন্ডলী একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথে একটা নির্দিষ্ট সময়ে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। যে সব জ্যোতিষ্কদের নিজেদের আলো আছে তাদেরনক্ষত্রবলে আর যে সব জ্যোতিষ্কদের নিজেদের আলো নেই তাদেরগ্রহবলে । পৃথিবীর নিজস্ব আলো নেই তাইপৃথিবী একটি গ্রহ।পৃথিবীর কাছের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রটি হল সূর্য । মহাকাশের কোটি কোটি নক্ষত্র নিয়ে গড়ে উঠেছেনক্ষত্রজগৎ(Galaxy)।আর এই নক্ষত্রজগতে সূর্যকে কেন্দ্র করে যে সব গ্রহ,উপগ্রহ,ধুমকেতু,উল্কা নির্দিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরে চলেছে তাদের নিয়ে গড়ে উঠেছে‘সৌরজগৎ‘ । সৌরজগতে মোট ৮ টি গ্রহ আছে । সূর্য থেকে দুরত্ব অনুসারে গ্রহগুলি হল -বুধ, শুক্র,পৃথিবী,মঙ্গল,বৃহস্পতি,শনি,ইউরেনাস ও নেপচুন । দুরত্ব অনুসারে পৃথিবী সূর্যের তৃতীয় গ্রহ । পৃথিবী উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে কেন্দ্র করে পরিক্রমণ করে, তাই পৃথিবী থেকে সূর্যের দুরত্ব সব সময় সমান থাকে না ।পৃথিবী থেকে সূর্যের মধ্যে গড় দুরত্ব থাকে প্রায় ১৫ কোটি কিমি. ।  পৃথিবীর আকৃতি প্রায় গোলাকার । এর নিরক্ষীয় ব্যাস ১২,৭৫৭ কিমি. এবং মেরুব্যাস ১২,৭১৪ কিমি. । প্রকৃত গড় ব্যাস ১২,৭৩৫.৫ কিমি.{(১২৭৫৭ + ১২৭১৪) / ২}। আর সাধারনত গড় ব্যাস ধরা হয় প্রায় ১২,৮০০ কিমি. । সুতরাং পৃথিবীর গড় ব্যাসার্ধ ৬,৪০০ কিমি. । আয়তন অনুসারে পৃথিবী সৌরজগতের পঞ্চম গ্রহ (বৃহস্পতি,শনি, ইউরেনাস ও নেপচুনের পর ) । পৃথিবী পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল প্রায় ৫১ কোটি ৫৪ লক্ষ বর্গকিলোমিটার । পৃথিবীর গড় পরিধি প্রায় ৪০,০০০ কিমি. (প্রকৃতপক্ষে ৪০,০৭৭ কিমি.) । খ্রিষ্টের জন্মের প্রায় ২০০ বছর আগে গ্রিক পন্ডিত এরাটসথেনিসমিশরের আলেকজান্দ্রিয়া ও সিয়েন শহরে সূর্যরশ্মির পতন কোণের তারতম্য বিচার করে অবিশ্বাস্য কিন্তু প্রায় সঠিক ভাবে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয় করেছিলেন  ।  পৃথিবীর আনুমানিক ওজন প্রায় ৫,৬৯৭X১০১৮টন বা ৬ কোটি কোটি কোটি টন (৬ -এর পর ২১ টি শূন্য বসালে যে সংখ্যা হয় ) । পৃথিবী মহাশূন্যে ভেসে থেকে তার অক্ষ বা মেরুদন্ডের উপর ভর করে নির্দিষ্ট গতিতে নির্দিষ্ট কক্ষপথে আবর্তন করতে করতে সূর্যকে পরিক্রমণ করে চলেছে  । পৃথিবী পৃষ্ঠের সবচেয়ে উঁচু অংশ ৮,৮৪৮ মিটার ( মাউন্ট এভারেস্ট ) এবং সবচেয়ে নীচু অংশ ১১ ,০৩৫ মিটার (প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা খাত ) সুতরাং ভূপৃষ্ঠের বন্ধুরতার পরিমাণ প্রায় ২০ কিলোমিটার  । পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ হল চাঁদ । চাঁদের আয়তন পৃথিবীর ৫০ ভাগের ১ ভাগ । চাঁদের ব্যাস ৩ ,৪৭৬ কিমি. । পৃথিবী থেকে চাঁদের দুরত্ব প্রায় ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার ৪০০ কিমি. । পৃথিবীর চারিদিকে ১ বার পরিক্রমণ করতে চাঁদের সময় লাগে ২৭ দিন ৮ ঘন্টা  । গ্রহ সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে অনেক ছোট ও বড় জ্যোতিষ্ক। এদের মধ্যে কয়েকটি খুব বড় এবং নিজের নিজের কক্ষপথ ধরে একটা নির্দিষ্ট সময়ে এরা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এদের নিজস্ব আলো নেই। এদেরকে গ্রহ বলে। মোট নটি গ্রহ সূর্যকে ঘিরে পাক খাচ্ছে। এদের নাম হল ,বুধ,শুক্র,পৃথিবী,মঙ্গল, বৃহস্পতি শন ইউরেনাস,নেপচুন ও প্লুটো। এদের মধ্যে প্লুটো কে মাঝে মাঝে গ্রহের আসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। পৃথিবী সূর্যের থেকে দূরত্ব অনুসারে তিন নম্বর গ্রহ হল আমাদের এই পৃথিবী। এর সূর্য থেকে গড় দূরত্ব হল ১৪১৫০০০০০ কিলোমিটার। ওজন ৫ ,৬৯৭X১০ ১৮ কোটি টন। পৃথিবীর ব্যাস ( মানে পৃথিবীকে এপার ওপার ফুটো করলে সেটা যতটা লম্বা হবে) হল প্রায় ১২৭০০ কিলোমিটার। কিন্তু এটা সব জায়াগায় সমান নয়। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু সোজাসুজ়ি যেতে ১২৭১৪ কিলমিটার রাস্তা পার হতে হবে। ঠিক তেমনি নিরক্ষীয় অঞ্চলে এই ব্যাস ১২৭৫৭ কিলোমিটার। পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশের ক্ষেত্রফল ৫১৫৪০০০০০ বর্গ কিলোমিটার। পৃথিবীর পরিধি ( মানে পৃথিবীকে ঘিরে একবার পাক খেয়ে আসতে যতটা পথ যেতে হবে) ৪০০০০ কিলোমিটার।   পৃথিবীর আহ্নিক ও বার্ষিক গতি পৃথিবীর গতি (Movement of the Earth ) আপাত দৃষ্টিতে মনে হয় যে পৃথিবী স্থিরভাবে অবস্থান করছে আর সূর্য তার চারদিকে ঘুরছে ।  অতীতের এই ধারণাকে ভুল বলে প্রথম ঘোষণা করেন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্টএবং গ্রিক বিজ্ঞানীগ্যালিলিও।তাঁরা বলেন সুর্য স্থিরভাবে অবস্থান করছে আর পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলি সূর্যের চারিদিকে অনবরত ঘুরে চলেছে । পরবর্তীকালে কোপারনিকাস ,কেপলার,নিউটন প্রমুখ বিজ্ঞানীরা এই মতবাদকে সমর্থন করেন । সুর্য প্রতিদিন সকলে পূর্বাকাশে উঠে আর সন্ধ্যায় পশ্চিমাকাশে অস্ত যায়।

সৌরজগতে ৮ টি গ্রহ আছে। যথা- বুধ (Murcury), শুক্র (Venus), পৃথিবী (Earth), মঙ্গল (Mars), বৃহস্পতি (Jupter), শনি (Saturn), ইউরেনাস (Uranus), নেপচুন (Neptune) । এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি এবং সবচেয়ে ছোট গ্রহ বুধ ।