Search This Blog

বাক্যের শ্রেণীবিভাগ (পর্ব ১): প্রকাশভঙ্গি অনুযায়ী বাক্যের শ্রেণীবিভাগ বাক্যের প্রকাশভঙ্গির ভিত্তিতে বাক্যকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে- বিবৃতিমূলক বাক্য: কোন কিছু সাধারণভাবে বর্ণনা করা হয় যে বাক্যে, তাকে বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। বিবৃতিমূলক বাক্য ২ প্রকার। ক) অস্তিবাচক বাক্য/ হাঁ বাচক বাক্য :যে বাক্যে সমর্থনের মাধ্যমে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে অস্তিবাচক বাক্য বা হাঁ বাচক বলে। যে বাক্যে হাঁ বাচক শব্দ থাকে, তাকে হাঁ বাচক বা অস্তিবাচক বাক্য বলে। যেমন- তুমি কালকে আসবে। আমি ঢাকা যাব। [সদর্থক বা অস্তিবাচক বাক্য : এতে কোনো নির্দেশ, ঘটনার সংঘটন বা হওয়ার সংবাদ থাকে। যেমন : বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা জিতেছে। আজ দোকানপাট বন্ধ থাকবে। ভাষা অনুশীলন; হৈমন্তী] খ) নেতিবাচক বাক্য/ না বাচক বাক্য :যে বাক্যে অসমর্থনের মাধ্যমে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে নেতিবাচক বাক্য বা না বাচক বলে। যে বাক্যে না বাচক শব্দ থাকে, তাকে নেতিবাচক বাক্য বা না বাচক বাক্য বলে। যেমন- তুমি কালকে আসবে না। আমি ঢাকা যাব না। [নেতিবাচক বা নঞর্থক বাক্য : এ ধরনের বাক্যে কোন কিছু হয় না বা ঘটছে না- নিষেধ, আকাঙ্ক্ষা, অস্বীকৃতি ইত্যাদি সংবাদ কিংবা ভাব প্রকাশ করা যায়। যেমন : আজ ট্রেন চলবে না। আপনি আমার সঙ্গে কথা বলবেন না। অস্তিবাচক- নেতিবাচক বাক্যের রূপান্তর [বাক্য রূপান্তর :বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতিতে পরিবর্তন করাকেই বাক্য রূপান্তর বলা হয়। অর্থাৎ, বাক্য রূপান্তর করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, বাক্যের অর্থ যেন পাল্টে না যায়। বাক্যের অর্থ পাল্টে গেলে বাক্যটি অন্য বাক্যে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাক্য রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতি তথা রূপ (Form) পরিবর্তন করতে হবে, বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করা যাবে না।] অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল ক) বিশেষণ পদের বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে অনেক অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন- অস্তিবাচক বাক্য : তুমি খুব ভাল। নেতিবাচক বাক্য : তুমি মোটেও খারাপ নও। (ভাল- খারাপ) খ) ‘না করলেই নয়’, ‘না করে পারবো না’ ইত্যাদি বাক্যাংশ যোগ করে অনেক অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর করতে হয়। যেমন- অস্তিবাচক বাক্য : তুমি কালকে আসবে। নেতিবাচক বাক্য : তুমি কালকে না আসলেই নয়। অস্তিবাচক বাক্য : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি এতো ভাল, তুমি আবার ঢুকবেই। নেতিবাচক বাক্য : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি এতো ভাল, তুমি আবার না ঢুকে পারবেই না। গ) নতুন কোন বিপরীতার্থক বা নঞর্থক (না বোধক) শব্দ যোগ করে। যেমন- অস্তিবাচক বাক্য : সে বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকল। নেতিবাচক বাক্য : সে বইয়ের পাতা উল্টানো বন্ধ রাখলো না। নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল ক) বিশেষণ পদের বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে অনেক নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন- নেতিবাচক বাক্য : সে ক্লাশে উপস্থিত ছিল না। অস্তিবাচক বাক্য : সে ক্লাশে অনুপস্থিত ছিল। খ) নেতিবাচক বাক্যের না বোধক বাক্যাংশকে কোন বিপরীতার্থক বিশেষণে রূপান্তর করেও অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন- নেতিবাচক বাক্য : দেবার্চনার কথা তিনি কোনদিন চিন্তাও করেন নি। অস্তিবাচক বাক্য : দেবার্চনার কথা তার কাছে অচিন্ত্যনীয় ছিল। নেতিবাচক বাক্য : এসব কথা সে মুখেও আনতে পারত না। অস্তিবাচক বাক্য : এসব কথা তার কাছে অকথ্য ছিল। গ) নতুন কোন অস্তিবাচক বিপরীতার্থক শব্দ যোগ করে। যেমন- নেতিবাচক বাক্য : মা জেগে দেখে খোকা তার পাশে নেই। অস্তিবাচক বাক্য : মা জেগে দেখে খোকা তার পাশে অনুপস্থিত। প্রশ্নসূচক বাক্য : যে বাক্যে কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা প্রকাশিত হয়, তাকে প্রশ্নসূচক বাক্য বলে। যেমন- তুমি কেমন আছ? প্রশ্নবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল মূলত প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক থেকে সরাসরি নেতিবাচক বাক্যে পরিণত করলেই নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরিত হয়ে যায়। কেবল প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক হিসেবে কল্পনা করতে হয়। আর যেগুলো সরাসরি অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরিত হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে অস্তি-নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের নিয়মে নেতিবাচক করতে হয়। যেমন- প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে? নেতি : তুমি কালকে স্কুলে আসোনি। প্রশ্ন : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি কি পড়াশোনা করার জন্য খারাপ? নেতি : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি পড়াশোনা করার জন্য খারাপ না। প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখোনি? নেতি : তুমি ছবিটা না দেখে পারোনি। প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর কিছু প্রশ্নবাচক বাক্যকে স্বাভাবিকভাবে সরাসরি অস্তিবাচক থেকে প্রশ্নবাচকে রূপান্তরিত করা যায়। আর যেগুলো সরাসরি রূপান্তর করলে নেতিবাচক হয়, সেগুলোকে নেতি থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরের নিয়মে অস্তিবাচক করতে হয়। যেমন- প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখোনি? অস্তি : তুমি ছবিটা দেখেছো। প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে? অস্তি : তুমি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে। অস্তি-নেতিবাচক (বিবৃতিমূলক) বাক্যকে প্রশ্নবাচক বাক্যে রূপান্তর বিবৃতিমূলক বাক্যে প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে সেগুলোকে বিপরীত বাক্যে (অস্তি হলে নেতি এবং নেতি হলে অস্তিবাচকে) সরাসরি রূপান্তর করলেই বাক্য রূপান্তর সম্পন্ন হয়। যেমন- বিবৃতি : তুমি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে। প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে : তুমি কি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে? প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে উপস্থিত ছিলে?/ তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে? বিবৃতি : তুমি ছবিটা দেখোনি। প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে : তুমি কি ছবিটা দেখোনি? প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখেছো? বিস্ময়সূচক বাক্য: যে বাক্যে আশ্চর্য হওয়ার অনুভূতি প্রকাশিত হয়, তাকে বিস্ময়সূচক বাক্য বলে। যেমন- সে কী ভীষণ ব্যাপার! ইচ্ছাসূচক বাক্য: যে বাক্যে শুভেচ্ছা, প্রার্থণা, আশীর্বাদ, আকাঙক্ষা প্রকাশ করা হয়, তাকে ইচ্ছাসূচক বাক্য বলে। যেমন- তোমার মঙ্গল হোক। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করচন। ভালো থেকো।