Search This Blog
বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন (পর্ব ২ ও শেষ পর্ব): হাইফেন বা সংযোগ চিহ্ন সমাসবদ্ধ পদের অংশগুলো বিচ্ছিন্ন করে দেখানোর জন্য হাইফেন ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ, দুইটি পদ একসঙ্গে লিখতে গেলে হাইফেন দিয়ে লিখতে হয়। যেমন- সুখ-দুঃখ, মা-বাবা। ইলেক বা লোপ চিহ্ন কোন বর্ণ লোপ করে বা বাদ দিয়ে সংক্ষিপ্ত উচ্চারণ বোঝাতে ইলেক বা লোপ চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। কবিতা বা অন্যান্য সাহিত্যে এটি ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন- মাথার ’পরে জ্বলছে রবি। (’পরে= ওপরে) পাগড়ি বাঁধা যাচ্ছে কা’রা? (কা’রা = কাহারা) উদ্ধরণ চিহ্ন বক্তার কথা হুবুহু উদ্ধৃত করলে সেটিকে এই চিহ্নের মধ্যে রাখতে হয়। অর্থাৎ, প্রত্যক্ষ উক্তিকে এই চিহ্নের মধ্যে রেখে লিখতে হয়। যেমন- ফিদেল ক্যাস্ত্রো বলেছেন, ‘জন্মভূমি অথবা মৃত্যু’। ব্র্যাকেট বা বন্ধনী চিহ্ন ( ).{ }. [ ] গণিতশাস্ত্রে এই তিনটির আলাদা গুরচত্ব থাকলেও ভাষার ক্ষেত্রে এদের আলাদা কোন গুরচত্ব নেই। তবে সাহিত্যে ও রচনায় ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য প্রথম বন্ধনী ব্যবহার করা হয়। যেমন- ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর রমনার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে) পাকিস্তান বাংলাদেশের কাছে পরাজয় মেনে দলিলে স্বাক্ষর করে। ]ব্যাকরণিক চিহ্ন বিরাম চিহ্নের বাইরেও বাংলা ভাষায় কিছু চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। এগুলো দিয়ে কোন বিরতি বা ছেদ বোঝানো হয় না। এগুলো ব্যাকরণের কতোগুলো টার্মস বোঝায়। ব্যাকরণের বিভিন্ন তথ্য বা টার্মস বোঝাতে যেই চিহ্নগুলো ব্যবহৃত হয়, সেগুলোই ব্যাকরণিক চিহ্ন। বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত উলেলখযোগ্য কয়েকটি ব্যাকরণিক চিহ্ন হলো- বোঝায় চিহ্ন/ আকৃতি উদাহরণ ধাতু √ √স্থা = স্থা ধাতু পরবর্তী শব্দ হতে উৎপন্ন ˂ জাঁদরেল ˂ জেনারেল পূর্ববর্তী শব্দ হতে উৎপন্ন ˃ গঙ্গা ˃ গাঙ সমানবাচক বা সমস্তবাচক = নর ও নারী = নরনারী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন *.যেখানে কমা অপেক্ষা অধিক বিরাম আবশ্যক সেখানে কোন চিহ্ন ব্যবহার হয়? (ঘ-২০০৩-০৪) *.কোন কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে বসে (ঘ-২০০৪-০৫) *.সেমিকোলনের বাংলা (ঘ-২০০৫-০৬) *.হাইফেন ব্যবহৃত হয়- (ক-২০০৫-০৬) *.বাক্যের সূচনায় সম্বোধন থাকলে যে বিরাম চিহ্ন বসে- (ক-২০০৬-০৭) *.বাক্যের প্রান্তিক চিহ্ন নয় কোনটি? (ক-২০০৬-০৭) *.অসম্পূর্ণ বাক্যের শেষে কোন বিরাম চিহ্ন বসে? (ক-২০০৮-০৯) *.পূর্ণ বাক্যে একাধিক স্বাধীন বাক্যাংশের পরে বসে- (ক-২০০৯-১০)
বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন (পর্ব ১): বিরাম চিহ্ন :বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য বাক্য উচ্চারণের সময় বাক্যের মাঝে ও শেষে বিরতি দিতে হয়। এই বিরতির পরিমাণ প্রয়োজন অনুযায়ী কম-বেশি হয়ে থাকে। আবার বাক্য উচ্চারণের সময় বিভিন্ন আবেগের জন্য উচ্চারণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। বাক্যটি লেখার সময় এই বিরতি ও আবেগের ভিন্নতা প্রকাশ করার জন্য যেই চিহ্নগুলো ব্যবহার করা হয়, তাদেরকে বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন বলে। প্রাচীন বাংলায় মাত্র দুইটি বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করা হতো, দাঁড়ি (।) ও দুই দাঁড়ি (॥)। পরবর্তীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজি ভাষার অনুকরণে বাংলায় আরো অনেকগুলো বিরাম চিহ্ন প্রচলন করেন। বর্তমানে ব্যবহৃত বিরাম চিহ্নগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিরাম চিহ্ন নিচে দেয়া হলো- যতি চিহ্নের নাম আকৃতি বিরতির পরিমাণ কমা , ১ বলতে যে সময় লাগে দাঁড়ি/ পূর্ণচ্ছেদ । এক সেকেন্ড জিজ্ঞাসা বা প্রশ্নসূচক চিহ্ন ? এক সেকেন্ড বিস্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন ! এক সেকেন্ড ড্যাস - এক সেকেন্ড কোলন ড্যাস :- এক সেকেন্ড কোলন : এক সেকেন্ড সেমি কোলন ; ১ বলার দ্বিগুণ সময় উদ্ধরণ বা উদ্ধৃতি চিহ্ন ‘ ’/ ‘‘ ’’ এক সেকেন্ড হাইফেন - থামার প্রয়োজন নেই ইলেক বা লোপ চিহ্ন ’ থামার প্রয়োজন নেই বন্ধনী চিহ্ন ( ) থামার প্রয়োজন নেই { } [ ] দুই দাঁড়ি ॥ ত্রিবিন্দু বা ত্রিডট ... বিরাম চিহ্নে ব্যবহার কমা (,) *.বাক্য সুস্পষ্ট করতে বাক্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগের মাঝে কমা বসে। যেমন- সুখ চাও, সুখ পাবে বই পড়ে। *.পরস্পর সম্পর্কিত একাধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ একসঙ্গে ব্যবহৃত হলে শেষ পদটি ছাড়া প্রতিটির পরে কমা বসে। যেমন- ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মন সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, ভালবাসা, আনন্দে ভরে থাকে। *.সম্বোধনের পরে কমা বসে। যেমন- রশিদ, এদিকে এসো। *.জটিল বাক্যের প্রত্যেকটি খন্ডবাক্যের পরে কমা বসে। যেমন- যে পরিশ্রম করে, সেই সুখ লাভ করে। *.কোন বাক্যে উদ্ধৃতি থাকলে, তার আগের খন্ডবাক্যের শেষে কমা (,) বসে। যেমন- আহমদ ছফা বলেন, ‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।’ তুমি বললে, ‘আমি কালকে আবার আসবো।’ *.মাসের তারিখ লেখার সময় বার ও মাসের পর কমা বসে। যেমন- ২৫ বৈশাখ, ১৪১৮, বুধবার। *.ঠিকানা লেখার সময় বাড়ির নাম্বার বা রাস্তার নামের পর কমা বসে। যেমন- ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা- ১০০০। *.ডিগ্রী পদবি লেখার সময় কমা ব্যবহৃত হয়। যেমন- ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, এম,এ, পি-এইচ,ডি। সেমিকোলন (;) কমা-র চেয়ে বেশি কিন্তু দাঁড়ি-র চেয়ে কম বিরতি দেয়ার জন্য সেমিকোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন- আমরা সবাই সবাইকে ভালবাসি; আসলেই কি সবাই ভালবাসি? *.এক ধরনের বাক্যন্তর্গত চিহ্ন *.একাধিক স্বাধীন বাক্যকে একটি বাক্যে লিখলে সেগুলোর মাঝখানে সেমিকোলন বসে *.বক্তব্য স্পষ্ট করার জন্য সমজাতীয় বাক্য পাশাপাশি প্রতিস্থাপন করলে সেমিকোলন বসে [অনুশীলনী; যৌবনের গান] দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।) প্রতিটি বাক্যের[] শেষে দাঁড়ি ব্যবহৃত হয়। দাঁড়ি দিয়ে বাক্যটি শেষ হয়েছে বোঝায়। যেমন- আমি কাল বাড়ি আসবো। প্রশ্নবোধক চিহ্ন প্রশ্নবোধক বাক্যের[] শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- তুমি কেমন আছ? বিস্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন বিস্মিত হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের জন্য কিংবা অন্য কোন হৃদয়ানুভূতি প্রকাশের জন্য এই চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- আহা! কী চমৎকার দৃশ্য। ছি! তুমি এত খারাপ। হুররে! আমরা খেলায় জিতেছি। আগে সম্বোধনের পরেও বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু আধুনিক নিয়ম অনুযায়ী সম্বোধনের পরে কমা বসে। তাই পুরোনো লেখায় সম্বোধনের পরে বিস্ময়সূচক চিহ্ন থাকলেও এখন এটা আর লেখা হয় না। যেমন- জননী! আজ্ঞা দেহ মোরে যাই রণস্থলে। কোলন একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্য লিখতে হলে কোলন ব্যবহার করতে হয়। যেমন- সভায় ঠিক করা হল : এক মাস পর আবার সভা অনুষ্ঠিত হবে। ড্যাস (-) যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে দুই বা তারচেয়েও বেশি পৃথক বাক্য লেখার সময় তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহার করা যায়। যেমন- তোমরা দরিদ্রের উপকার কর- এতে তোমাদের সম্মান যাবে না- বাড়বে। *.কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয় *.বাক্য অসম্পূর্ণ থাকলে বাক্যের শেষে ড্যাশ চিহ্ন বসে *.গল্পে উপন্যাসে প্রসঙ্গের পরিবর্তন বা ব্যাখ্যায় ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয় *.নাটক বা গল্প-উপন্যাসে সংলাপের আগেও ড্যাশ চিহ্ন বসে [অনুশীলনী; যৌবনের গান] কোলন ড্যাস (:-) উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগের জন্য কোলন ড্যাস ব্যবহৃত হয়। যেমন- পদ পাঁচ প্রকার :- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন: বিরাম চিহ্ন :বাক্যের অর্থ সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য বাক্য উচ্চারণের সময় বাক্যের মাঝে ও শেষে বিরতি দিতে হয়। এই বিরতির পরিমাণ প্রয়োজন অনুযায়ী কম-বেশি হয়ে থাকে। আবার বাক্য উচ্চারণের সময় বিভিন্ন আবেগের জন্য উচ্চারণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। বাক্যটি লেখার সময় এই বিরতি ও আবেগের ভিন্নতা প্রকাশ করার জন্য যেই চিহ্নগুলো ব্যবহার করা হয়, তাদেরকে বিরাম চিহ্ন বা যতি চিহ্ন বা ছেদ চিহ্ন বলে। প্রাচীন বাংলায় মাত্র দুইটি বিরাম চিহ্ন ব্যবহার করা হতো, দাঁড়ি (।) ও দুই দাঁড়ি (॥)। পরবর্তীতে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজি ভাষার অনুকরণে বাংলায় আরো অনেকগুলো বিরাম চিহ্ন প্রচলন করেন। বর্তমানে ব্যবহৃত বিরাম চিহ্নগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি বিরাম চিহ্ন নিচে দেয়া হলো- যতি চিহ্নের নাম আকৃতি বিরতির পরিমাণ কমা , ১ বলতে যে সময় লাগে দাঁড়ি/ পূর্ণচ্ছেদ । এক সেকেন্ড জিজ্ঞাসা বা প্রশ্নসূচক চিহ্ন ? এক সেকেন্ড বিস্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন ! এক সেকেন্ড ড্যাস - এক সেকেন্ড কোলন ড্যাস :- এক সেকেন্ড কোলন : এক সেকেন্ড সেমি কোলন ; ১ বলার দ্বিগুণ সময় উদ্ধরণ বা উদ্ধৃতি চিহ্ন ‘ ’/ ‘‘ ’’ এক সেকেন্ড হাইফেন - থামার প্রয়োজন নেই ইলেক বা লোপ চিহ্ন ’ থামার প্রয়োজন নেই বন্ধনী চিহ্ন ( ) থামার প্রয়োজন নেই { } [ ] দুই দাঁড়ি ॥ ত্রিবিন্দু বা ত্রিডট ... বিরাম চিহ্নে ব্যবহার কমা (,) *.বাক্য সুস্পষ্ট করতে বাক্যকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে প্রতিটি ভাগের মাঝে কমা বসে। যেমন- সুখ চাও, সুখ পাবে বই পড়ে। *.পরস্পর সম্পর্কিত একাধিক বিশেষ্য বা বিশেষণ পদ একসঙ্গে ব্যবহৃত হলে শেষ পদটি ছাড়া প্রতিটির পরে কমা বসে। যেমন- ১৬ ডিসেম্বর আমাদের মন সুখ, স্বাচ্ছন্দ্য, ভালবাসা, আনন্দে ভরে থাকে। *.সম্বোধনের পরে কমা বসে। যেমন- রশিদ, এদিকে এসো। *.জটিল বাক্যের প্রত্যেকটি খন্ডবাক্যের পরে কমা বসে। যেমন- যে পরিশ্রম করে, সেই সুখ লাভ করে। *.কোন বাক্যে উদ্ধৃতি থাকলে, তার আগের খন্ডবাক্যের শেষে কমা (,) বসে। যেমন- আহমদ ছফা বলেন, ‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ।’ তুমি বললে, ‘আমি কালকে আবার আসবো।’ *.মাসের তারিখ লেখার সময় বার ও মাসের পর কমা বসে। যেমন- ২৫ বৈশাখ, ১৪১৮, বুধবার। *.ঠিকানা লেখার সময় বাড়ির নাম্বার বা রাস্তার নামের পর কমা বসে। যেমন- ৬৮, নবাবপুর রোড, ঢাকা- ১০০০। *.ডিগ্রী পদবি লেখার সময় কমা ব্যবহৃত হয়। যেমন- ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক, এম,এ, পি-এইচ,ডি। সেমিকোলন (;) কমা-র চেয়ে বেশি কিন্তু দাঁড়ি-র চেয়ে কম বিরতি দেয়ার জন্য সেমিকোলন ব্যবহৃত হয়। যেমন- আমরা সবাই সবাইকে ভালবাসি; আসলেই কি সবাই ভালবাসি? *.এক ধরনের বাক্যন্তর্গত চিহ্ন *.একাধিক স্বাধীন বাক্যকে একটি বাক্যে লিখলে সেগুলোর মাঝখানে সেমিকোলন বসে *.বক্তব্য স্পষ্ট করার জন্য সমজাতীয় বাক্য পাশাপাশি প্রতিস্থাপন করলে সেমিকোলন বসে [অনুশীলনী; যৌবনের গান] দাঁড়ি বা পূর্ণচ্ছেদ (।) প্রতিটি বাক্যের[] শেষে দাঁড়ি ব্যবহৃত হয়। দাঁড়ি দিয়ে বাক্যটি শেষ হয়েছে বোঝায়। যেমন- আমি কাল বাড়ি আসবো। প্রশ্নবোধক চিহ্ন প্রশ্নবোধক বাক্যের[] শেষে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- তুমি কেমন আছ? বিস্ময়সূচক বা আশ্চর্যবোধক চিহ্ন বিস্মিত হওয়ার অনুভূতি প্রকাশের জন্য কিংবা অন্য কোন হৃদয়ানুভূতি প্রকাশের জন্য এই চিহ্ন ব্যবহৃত হয়। যেমন- আহা! কী চমৎকার দৃশ্য। ছি! তুমি এত খারাপ। হুররে! আমরা খেলায় জিতেছি। আগে সম্বোধনের পরেও বিস্ময়সূচক চিহ্ন ব্যবহার করা হতো। কিন্তু আধুনিক নিয়ম অনুযায়ী সম্বোধনের পরে কমা বসে। তাই পুরোনো লেখায় সম্বোধনের পরে বিস্ময়সূচক চিহ্ন থাকলেও এখন এটা আর লেখা হয় না। যেমন- জননী! আজ্ঞা দেহ মোরে যাই রণস্থলে। কোলন একটি অপূর্ণ বাক্যের পর অন্য একটি বাক্য লিখতে হলে কোলন ব্যবহার করতে হয়। যেমন- সভায় ঠিক করা হল : এক মাস পর আবার সভা অনুষ্ঠিত হবে। ড্যাস (-) যৌগিক ও মিশ্র বাক্যে দুই বা তারচেয়েও বেশি পৃথক বাক্য লেখার সময় তাদের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে ড্যাস চিহ্ন ব্যবহার করা যায়। যেমন- তোমরা দরিদ্রের উপকার কর- এতে তোমাদের সম্মান যাবে না- বাড়বে। *.কোনো কথার দৃষ্টান্ত বা বিস্তার বোঝাতে ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয় *.বাক্য অসম্পূর্ণ থাকলে বাক্যের শেষে ড্যাশ চিহ্ন বসে *.গল্পে উপন্যাসে প্রসঙ্গের পরিবর্তন বা ব্যাখ্যায় ড্যাশ চিহ্ন ব্যবহৃত হয় *.নাটক বা গল্প-উপন্যাসে সংলাপের আগেও ড্যাশ চিহ্ন বসে [অনুশীলনী; যৌবনের গান] কোলন ড্যাস (:-) উদাহরণ বা দৃষ্টান্ত প্রয়োগের জন্য কোলন ড্যাস ব্যবহৃত হয়। যেমন- পদ পাঁচ প্রকার :- বিশেষ্য, বিশেষণ, সর্বনাম, অব্যয় ও ক্রিয়া।
ব্যাকরণ ও এর আলোচ্য বিষয়: ব্যাকরণ:ব্যাকরণ শব্দটির ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বিশেষভাবে বিশ্লেষণ। শব্দটি ভাঙলে পাওয়া যায়- বি+আ+কৃ+অন = ব্যাকরণ। যে শাস্ত্রে কোনো ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে ব্যাকরণ বলে। [বাংলা ভাষার ব্যাকরণ(নবম-দশম শ্রেণী); মুনীর চৌধুরী ও মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী] সুতরাং, যে শাস্ত্রে বাংলা ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন প্রকৃতি ও স্বরূপের বিচার বিশ্লেষণ করা হয় এবং বিভিন্ন উপাদানের সম্পর্ক নির্ণয় ও প্রয়োগবিধি বিশদভাবে আলোচিত হয়, তাকে বাংলা ব্যাকরণ বলে। ব্যাকরণ পাঠের প্রয়োজনীয়তা : ১. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের গঠন-প্রকৃতি জানা ২. ভাষার বিভিন্ন উপাদানের সুষ্ঠু ব্যবহার করা ৩. ভাষা ব্যবহারের সময় শুদ্ধাশুদ্ধি নির্ণয় করতে পারা বাংলা ব্যাকরণের আলোচ্য বিষয় : প্রতিটি ভাষারই ৪টি মৌলিক অংশ থাকে- ধ্বনি, শব্দ, বাক্য ও অর্থ। আর তাই সব ভাষার ব্যাকরণই প্রধানত এই ৪টি অংশ নিয়েই আলোচনা করে। অর্থাৎ, ব্যাকরণের বা বাংলা ব্যাকরণের মূল আলোচ্য বিষয়/ অংশ ৪টি- ১. ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology) ২. শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology) ৩. বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) ৪. অর্থতত্ত্ব (Semantics) এছাড়াও ব্যাকরণে আরো বেশ কিছু বিষয় নিয়েও আলোচনা করা হয়। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- অভিধানতত্ত্ব(Lexicography), ছন্দ ও অলংকার, ইত্যাদি। নিচে বাংলা ব্যাকরণের এই ৪টি মূল বিষয় সংশ্লিষ্ট কিছু সংজ্ঞা দেওয়া হলো : ধ্বনি:কোন ভাষারউচ্চারণের ক্ষুদ্রতম এককইহলো সেই ভাষার ধ্বনি। ধ্বনি ভাষার মূল উপাদান। ধ্বনিমূল:ধ্বনির সূক্ষ্মতম মৌলিক অংশকে বা একককে বলা হয় ধ্বনিমূল বা phoneme। এই ধ্বনিমূল বা phoneme থেকেই ধ্বনিতত্ত্বের নাম হয়েছে Phonology। বর্ণ:বিভিন্ন ধ্বনিকে লেখার সময় বা নির্দেশ করার সময় যে চিহ্ন ব্যবহার করা হয়, তাকে বর্ণ বলে। শব্দ:একটি ধ্বনি বা একাধিক ধ্বনি একত্রিত হয়ে যখন কোনোসুনির্দিষ্ট অর্থপ্রকাশ করে, তখন সেই ধ্বনি বা ধ্বনিসমষ্টিকে শব্দ বলে।বাক্যের মূল উপাদান শব্দ। রূপ:শব্দের ক্ষুদ্রতম অংশকে বলা হয় রূপ বা morpheme। রূপ শব্দের ক্ষুদ্রতম একক। এই রূপ বা morpheme থেকেই শব্দতত্ত্বের নাম হয়েছে রূপতত্ত্ব বা Morphology। বাক্য:কতোগুলো পদসুবিন্যস্তহয়ে বক্তার মনোভাবসম্পূর্ণভাবেপ্রকাশ করলে তাকে বাক্য বলে। ভাষার মূল উপকরণ বাক্য। বাংলা ব্যাকরণের মূল ৪টি অংশে যে সব বিষয় আলোচনা করা হয়, সেগুলো নিচে একটি ছকের মাধ্যমে দেয়া হলো: ব্যাকরণের অংশ আলোচ্য বিষয় ধ্বনিতত্ত্ব (Phonology) (ধ্বনি সম্পর্কিত বিষয়াদি এখানে আলোচিত হয়।) ধ্বনির উচ্চারণবিধি ধ্বনি পরিবর্তন সন্ধি/ধ্বনিসংযোগ (সন্ধি ধ্বনির মিলন। তাই এটি ধ্বনিতত্ত্বে আলোচিত হয়।) ণত্ব ও ষত্ব বিধান শব্দতত্ত্ব বা রূপতত্ত্ব (Morphology) (শব্দ সম্পর্কিত বিষয়াদি এখানে আলোচিত হয়।) সমাস (সমাস শব্দের মিলন। তাই এটি শব্দতত্ত্বে আলোচিত হয়।) প্রকৃতি-প্রত্যয় (প্রকৃতি-প্রত্যয় শব্দ নিয়ে কাজ করে। মনে রাখা দরকার, প্রকৃতি মাত্রই প্রাতিপদিক বা ক্রিয়াপদ, অর্থাৎ স্বাধীন শব্দ।) উপসর্গ (উপসর্গ নিজে শব্দ না হলেও শব্দ ছাড়া এর কোনো প্রয়োজন নেই। উপরন্তু উপসর্গ নতুন শব্দ তৈরির একটি উল্লেখযোগ্য হাতিয়ারও বটে।) বচন পুরুষ ও স্ত্রীবাচক শব্দ দ্বিরুক্ত শব্দ সংখ্যাবাচক শব্দ পদাশ্রিত নির্দেশক ধাতু শব্দের শ্রেণীবিভাগ বাক্যতত্ত্ব বা পদক্রম (Syntax) (বাক্য সম্পর্কিত বিষয়াদি এখানে আলোচিত হয়।) পদ প্রকরণ (শব্দ বাক্যে ব্যবহৃত হলে তখনই সেটাকে পদ বলে। তাই পদ বাক্যের ও পদ প্রকরণ বাক্যতত্ত্বের অন্তর্গত।) ক্রিয়াপদ কারক ও বিভক্তি (বাক্যের ক্রিয়াপদের সঙ্গে নামপদের সম্পর্ককে কারক বলে। বাক্যের অন্তর্গত পদ নিয়ে কাজ করে বলে কারকও বাক্যতত্ত্বের অন্তর্গত।) কাল পুরুষ অনুসর্গ বাগধারা বাচ্য উক্তি যতি ও ছেদ চিহ্ন (বাক্যের অর্থ সম্পূর্ণভাবে প্রকাশ করতে যতি বা ছেদ চিহ্ন ব্যবহার হয়। অর্থাৎ, এরা বাক্যের সঙ্গে সম্পর্কিত।) বাক্যের প্রকারভেদ বাক্যে পদ-সংস্থাপনার ক্রম বা পদক্রম অর্থতত্ত্ব (Semantics) (অর্থ সম্পর্কিত বিষয়াদি এখানে আলোচিত হয়।) শব্দের অর্থবিচার বাক্যের অর্থবিচার অর্থের প্রকারভেদ; মুখ্যার্থ, গৌণার্থ, বিপরীতার্থ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন *.‘ব্যাকরণ’ শব্দটি গঠিত হয়েছে: (গ-২০০৮-০৯) *.বাগধারা ব্যাকরণের কোন অংশে আলোচিত হয়: (গ-২০০৪-০৫) *.‘ব্যকরণ’ শব্দের সঠিক অর্থ হল- (গ-২০০১-০২)
বাক্য প্রকরণ (বাকি অংশ): ঙ) দুর্বোধ্যতা : অপ্রচলিত কিংবা দুর্বোধ্য শব্দ ব্যবহার করলে বাক্য তার যোগ্যতা গুণ হারায়। এই ধরনের শব্দ বাক্যের শব্দগুলোর মধ্যে অর্থগত মিলবন্ধন নষ্ট করে। যেমন- এ কী প্রপঞ্চ! বাক্যটির প্রপঞ্চ শব্দটি অপ্রচলিত, একই সঙ্গে দুর্বোধ্য। তাই বাক্যটির অর্থ পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে না। ফলে বাক্যের পদগুলোর মধ্যের অর্থগত মিলবন্ধন বিনষ্ট হয়েছে। তাই এটি কোন যোগ্যতা সম্পন্ন সার্থক বাক্য হতে পারেনি। চ) রীতিসিদ্ধ অর্থবাচকতা : বাক্যে শব্দ ব্যবহারের ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, শব্দগুলো যাতে তাদের রীতিসিদ্ধ অর্থ অনুযায়ী ব্যবহৃত হয়। শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ও ব্যবহারিক বা রীতিসিদ্ধ অর্থ ভিন্ন হলে, অবশ্যই রীতিসিদ্ধ অর্থে শব্দ ব্যবহার করতে হবে। নয়তো শব্দটির সঙ্গে বাক্যের অন্য শব্দগুলোর অর্থগত মিলবন্ধন নষ্ট হবে। যেমন- ‘বাধিত’ শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ ‘বাধাপ্রাপ্ত’। আর ব্যবহারিক বা রীতিসিদ্ধ অর্থ হলো ‘কৃতজ্ঞ’। শব্দটি ব্যবহারের সময় কৃতজ্ঞ অর্থেই ব্যবহার করতে হবে। নয়তো তা অর্থ বিকৃত করবে। ফলে বাক্যটি যোগ্যতা গুণ হারাবে। উদ্দেশ্য ও বিধেয় প্রতিটি বাক্যের দুটি অংশ থাকে- উদ্দেশ্য ও বিধেয়। বাক্যে যার সম্পর্কে কিছু বলা হয়, তাকে উদ্দেশ্য বলে। বাক্যে উদ্দেশ্য সম্পর্কে যা কিছু বলা হয়, তাই বিধেয়। যেমন- বইটি খুব ভালো। বাক্যটিতে বইটি’ সম্পর্কে বলা হয়েছে। সুতরাং, এখানে ‘বইটি’ উদ্দেশ্য। অন্যদিকে, ‘বইটি’ সম্পর্কে বলা হয়েছে ‘খুব ভালো’। এই ‘খুব ভালো’ বাক্যটির বিধেয় অংশ। উদ্দেশ্য অংশ একটি শব্দ না হয়ে একটি বাক্যাংশও হতে পারে। এবং সেই শব্দ বা বাক্যাংশটি শুধু বিশেষ্য-ই হবে, এমন কোন কথাও নেই। উদ্দেশ্য বিশেষণ বা বিশেষণভাবাপন্ন বাক্যাংশ, এমনকি ক্রিয়াভাবাপন্ন বাক্যাংশও হতে পারে। উদ্দেশ্য বিধেয় সৎ হওয়া খুব কঠিন। (এখানে ক্রিয়াভাবাপন্ন বাক্যাংশ উদ্দেশ্য) সৎ লোকেরাই প্রকৃত সুখী। (এখানে বিশেষণভাবাপন্ন বাক্যাংশ উদ্দেশ্য) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন *.‘রাত্রিতে রৌদ্র হয়।’- এই বাক্যে কিসের অভাব? (ক-২০০৯-১০) *.ভাষার মূল উপকরণ কি? (গ-২০০৮-০৯) *.বাংলাভাষায় ‘গুরুচণ্ডালী’ দোষ মানে হলো: (গ-২০০৬-০৭)
Subscribe to:
Posts (Atom)