Search This Blog
List of FIFA World Cup finals: Founded1930 Region International (FIFA) Number of teams204 (qualifiers) 32 (finals) Current champions Spain (1st title) Most successful team(s) Brazil(5 titles) TheFIFAWorldCupis an internationalassociation footballcompetition established in 1930. It is contested by themen's national teamsof the members ofFédération Internationale de Football Association (FIFA), the sport's global governing body. The tournament has taken place every four years, except in 1942 and 1946, when the competition was cancelled due to WorldWar II. Themost recentWorldCup, hosted by South Africa in 2010, was won by Spain, who beat theNetherlands1–0 after extra time. ThenextWorldCupis scheduled to be held in Brazil from 12 June to 13 July 2014.[1] TheWorldCupfinal matches are the last of the competition, and the results determine which country's team is declaredworldchampions. If after 90 minutes of regular play the score is a draw, an additional 30-minute period of play, calledextra time, is added. If such a game is still tied after extra time it is decided by kicks from the penalty mark, commonly called a penalty shootout. The winning penalty shoot-out team are then declared champions.[2]The tournament has been decided by a one-off match on every occasion except 1950, when the tournament winner was decided by a final round-robin group contested by four teams (Uruguay, Brazil, Sweden, and Spain). Uruguay's 2–1 victory over Brazil was the decisive match (and one of the last two matches of the tournament) which put them ahead on points and ensured that they finished top of the group asworldchampions. Therefore, this match is regarded byFIFAas the de facto final of the 1950WorldCup.[3] In the 19 tournaments held, 76 nations haveappeared at least once. Of these, twelve have made it to the final match, and eight have won.[n 1]With five titles,Brazilis the most successfulWorldCupteam and also the only nation to haveparticipated in everyWorldCupfinals tournament.[5]Italyhave four titles andGermanyhave three. The other former champions areUruguay, who won the inaugural tournament, andArgentina, with two titles each, andEnglandandFrance, who have each won one. The current champions,Spain, took their first title in2010.[6]
শেখ মুজিবুর রহমান (পর্ব ৮ ও শেষ পর্ব): অনেক ইতিহাসবিদ মুজিবকে বিদ্রোহে মদদদাতা নেতা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং তাঁদের মতে তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে প্ররোচিত করলেও রাষ্ট্র পরিচালনায় অদক্ষ হিসেবে উল্লেখ করেন। [২০]বাংলাদেশের নেতা হিসেবে শাসনকালে, মুসলিম ধর্মীয় নেতারা মুজিবের তীব্র সমালোচনা করেন তাঁর ধর্মনিরপেক্ষতার নীতির কারণে। ভারতীয় সরকারের কাছ থেকে ব্যাপক সহযোগিতা গ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক ও পররাষ্ট্রনীতিতে ভারতের সাথে একাত্মতার কারণে অনেকে মুজিবের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন। সমালোচকদের অনেকে আশঙ্কা করেন বাংলাদেশ ভারতের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হয়ে একটি স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত হবে। [১৬]মুজিবের একদলের শাসন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের দমন জনগণের একটি বড় অংশের অসন্তোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং বাংলাদেশের বহুদলীয় গণতান্ত্রের চর্চাকে দীর্ঘসময়ের জন্য কক্ষচ্যুত করে। [১৬] ১৯৯৬ সালে পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়ার পূর্বে মুজিবের মৃত্যুর পরবর্তী সরকারগুলোর মুজিব বিরোধীতার কারণে তাঁর সম্পর্কে জনমনে নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়। তাঁর ভাবমূর্তি আবার ফিরে আসে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে ফিরে আসার পর। ১৫ আগস্টকে জাতীয় শোক দিবসহিসেবে পালন করা হয়। তিনি এখনো আওয়ামী লীগের আদর্শগত প্রতীক হয়ে আছেন এবং দলটি মুজিবের সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা ধারণ করে চলেছে। মুজিব বাংলাদেশ, ভারত ও বিশ্বের বাঙালি বুদ্ধিজীবিদের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত। পাকিস্তানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলন এবং পাকিস্তানের গোষ্ঠীগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও বাঙালিদের আন্দোলনকে স্বাধীনতার পথে ধাবিত করার জন্য তিনি ব্যাপকভাবে প্রশংসিত। [২৬] ২০০৪ সালে বিবিসি'র বাংলা রেডিও সার্ভিসের পক্ষ থেকে সারা বিশ্বে যে জরিপ চালানো হয়, তাতে মুজিব সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে বিবেচিত হন।
শেখ মুজিবুর রহমান (পর্ব ৭): বাকশাল [সম্পাদনা] স্বাধীনতা পর অচিরেই মুজিবের সরকারকে ক্রমশ বাড়তে থাকা অসন্তোষ সামাল দিতে হয়। তাঁর রাষ্ট্রীয়করণ ও ইণ্ডাস্ট্রিয়াল সমাজতন্ত্রের নীতি প্রশিক্ষিত জনবল, অদক্ষতা, মাত্রাতিরিক্ত দুর্নীতি আর দুর্বল নেতৃত্বের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। [১৫]মুজিব অতিমাত্রায় জাতীয় নীতিতে মনোনিবেশ করায় স্থানীয় সরকার প্রয়োজনীয় গুরুত্ব লাভে ব্যর্থ হয়। আওয়ামী লীগ ও কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ করায় গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে পড়ে। এ সময় তৃণমূল পর্যায়ে কোন নির্বাচনই অনুষ্ঠিত হয় নি। [১৯]আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যে কমিউনিস্ট এবং ইসলামি মৌলবাদীরা অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশকে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ঘোষণা করায় ইসলামিক গোত্রের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। এ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ পদে আপনজনদের নিয়োগ দেয়ার জন্য মুজিবের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ আনা হয়। [১৪]১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষ খাদ্য সংকট আরো বাড়িয়ে দেয় এবং অর্থনীতির প্রধান উত্স কৃষিকে ধ্বংশ করে ফেলে। রাজনৈতিক নেতৃত্বের অভাব, দ্রব্যমূল্যের অসামঞ্জস্যতা, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের ব্যর্থতার কারণে মুজিবকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়। [১৫] রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সংঘাতের মাত্রা বাড়তে থাকায় মুজিবও তাঁর ক্ষমতা বাড়াতে থাকেন। ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মুজিব জরুরি অবস্থা জারি করেন এবং তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকদের অনুমোদনের মাধ্যমে সকল বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। তদুপরি ৪টি বাদে সকল সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করা হয়। মুজিবকে আজীবন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয় এবং চূড়ান্ত ক্ষমতা প্রদান করা হয়। [২০][১৪]তাঁর রাজনৈতিক সমর্থকেরা একত্রিত হয়েবাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ নামের রাজনৈতিক দল গঠন করে। সংক্ষেপে বাকশাল নামে পরিচিত এ দলটি তখন একমাত্র বৈধ দল ছিল।[২]দলটি প্রত্যন্ত জনসাধারণ, কৃষক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেদের বিবেচিত করে রাষ্ট্রযন্ত্রের কর্তৃত্ব গ্রহণ করে। দলটি বৃহৎ সমাজতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড গ্রহণ করে। সরকারি বাহিনীর সাথে সমর্থকদের নিয়ে গঠিত জাতীয় রক্ষী বাহিনীর সহায়তায় মুজিব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করেন এবং সারাদেশের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেন। [২০][২১]রক্ষী বাহিনী এবং পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচার ও রাজনৈতিক হত্যার অভিযোগ ওঠে। মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারীরা মুজিবের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে ওঠেন [২২]এবং তাঁর কর্মকাণ্ডকে গণতন্ত্র ও নাগরিক অধিকারবিরোধী বলে গণ্য করেন। [১৪]মুজিবের বিরোধীরা অসন্তোষ ও সরকারের ব্যর্থতার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে ওঠে। হত্যাকাণ্ড [সম্পাদনা] ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট প্রত্যূষে একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক দিয়ে রাষ্ট্রপতির ধানমণ্ডিস্থ বাসভবন ঘিরে ফেলে এবং শেখ মুজিব, তাঁর পরিবার এবং তাঁর ব্যক্তিগত কর্মচারীদের হত্যা করে। [২][১৪]কেবল তাঁর দুই মেয়েশেখ হাসিনাও শেখ রেহানা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করার কারণে বেঁচে যান। তাদের বাংলাদেশে ফিরে আসার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। [২৩]সেনা অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করেন বিক্ষুব্ধ আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সামরিক কর্মকর্তারা। এদের মধ্যে ছিলেন শেখ মুজিবের প্রাক্তন সহকর্মী খন্দকার মোশতাক আহমেদ, যিনি তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন, এবং ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে মুজিব হত্যাকাণ্ডের বিচারের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে খন্দকার মোশতাক সরকার ইমডেমনিটি (দায়মুক্তি) অধ্যাদেশ জারি করেন এবং জেনারেল জিয়াউর রহমান ও পাকিস্তানপন্থী প্রধানমন্ত্রী শাহ আজিজুর রহমানের নেতৃত্বে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীতে তার বৈধতা দেয়া হয়। যা ১২ অগাস্ট, ১৯৯৬ তারিখে সংসদে রহিত করা হয়।। সংবাদ মাধ্যমে এ হত্যা কান্ডের ইন্ধনদাতা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সেণ্ট্রাল ইণ্টেলিজেন্স এজেন্সি সিআইএ-কে দায়ী করা হয়। [২৪]বাংলাদেশে অবস্থিত তৎকালীন রাষ্ট্রদুত ইউজিন দিয়ে লরেন্স লিফসুল্জ সিআইএ-কে অভ্যুত্থান ও গণহত্যার জন্য দোষারোপ করেন।[২৫]তাঁর মরদেহ তাঁর জন্মস্থান টুঙ্গিপাড়ায় হেলিকপ্টারে করে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সামরিক তত্ত্বাবধানে দাফন করা হয়। অন্যান্যদের ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয়। মুজিবের মৃত্যু বাংলাদেশকে বহু বছরের রাজনৈতিক সংঘাতের দিকে টেনে নেয়। সেনাঅভ্যুত্থানের নেতারা অল্পদিনের মধ্যেই উচ্ছেদ হয়ে যান এবং অভ্যুত্থান, পাল্টা অভ্যুত্থান আর রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে দেশ অচল হয়ে পড়ে। [২০]১৯৭৫ সালের ৭ই নভেম্বর আরেকটি সেনা অভ্যুত্থানের ফলশ্রতিতেমেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা আসীন হওয়ার পর শৃঙ্খলা অনেকাংশে ফিরে আসে। সেনাঅভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতা কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমানসহ ১৪ জন সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাকিরা বিদেশে পালিয়ে গিয়েছিলেন। [২][২৬] সমালোচনা ও কৃতিত্ব [সম্পাদনা] বঙ্গবন্ধু স্কয়ার ভাস্কর্য কিছু কিছু ঐতিহাসিকদের মতে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের ভিতরের সংঘাত ও বৈষম্যগুলোকে শেখ মুজিবও তাঁর দল অতিরঞ্জিত করেছিল এবং স্বাধীনতা বাংলাদেশকে শিল্প ও মানবসম্পদের ক্ষেত্রে ক্ষতির সম্মুখীন করে। [২৭]সৌদি আরব ওচীনাসরকার শেখ মুজিবের সমালোচনা করে এবং মুজিবের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত অনেক দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়নি।
শেখ মুজিবুর রহমান (পর্ব ৬): পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ও পুলিশ রেজিমেণ্টে কর্মরত পূর্ব বাংলার সদস্যবৃন্দ দ্রুত বিদ্রোহ ঘোষণা করে এবং লীগ সদস্যবৃন্দ কলকাতায় তাজউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্ব প্রবাসে বাংলাদেশ সরকার গঠন করে। পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তি বাহিনীর নেতৃত্ব বড় রকমের বিদ্রোহ সংঘটিত হতে থাকে। আন্তর্জাতিক চাপ থাকা স্বত্ত্বেও পাকিস্তানি সরকার মুজিবকে ছেড়ে দিতে এবং তাঁর সাথে সমঝোতা করতে অস্বীকৃতি জানায়। [১০] যুদ্ধবর্তী সময়ে মুজিবের পরিবারকে গৃহবন্দী করে রাখা হয়। তাঁর সন্তান শেখ কামাল মুক্তি বাহিনীর একজন গুরুত্বপূর্ণ অফিসার ছিলেন। মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তান বাহিনীর ভিতরে সংঘটিত যুদ্ধটিই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধনামে পরিচিত। ১৯৭১ সালে ভারতীয় সরকারের অংশগ্রহণের পর, পাকিস্তানী সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ দলের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং লীগ নেতৃবৃন্দ ঢাকায় ফিরে সরকার গঠন করেন। পাকিস্তানি শাসকবৃন্দ মুজিবকে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি মুক্তিদান করে। এরপর তিনি লণ্ডন হয়ে নতুন দিল্লিতে ফিরে আসেন এবং ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ’র সাথে সাক্ষাতের পর জনসমক্ষে “ভারতের জনগণ, আমার জনগণের শ্রেষ্ঠ বন্ধু” বলে তাঁকে সাধুবাদ জানান।[১১]তিনি ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বাংলাদেশে ফিরে আসেন। গান্ধীর সাথে সেদিন তিনি ঢাকায় জড়ো হওয়া প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের সামনে বক্তৃতা দেন। [১২] বাংলাদেশের শাসন [সম্পাদনা] শেখ মুজিবর রহমান অল্পদিনের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৭০-এ পূর্ব পাকিস্তান আইনসভার জন্য নির্বাচিত রাজনীতিবিদরা নতুন রাষ্ট্রের প্রথম সংসদ গঠন করেন। মুক্তিবাহিনী এবং অন্যান্য মিলিশিয়াদের নিয়ে নতুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠিত হয়। তাঁরই অভিপ্রায়ক্রমে ১৭ মার্চ ১৯৭২ ভারতীয় বাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের ভূ-খণ্ড ত্যাগ করে। [৪] বৃহৎ রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে স্বীকৃতি লাভের পর শেখ মুজিব পাকিস্তান,ওআইসি,জাতিসংঘওজোট-নিরপেক্ষ আন্দোলনেবাংলাদেশের সদস্যপদ নিশ্চিত করেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে ভ্রমণ করে বাংলাদেশের জন্য মানবীয় ও উন্নয়নকল্পের জন্য সহযোগিতা চান। [৪]তিনি ভারতের সাথে একটি ২৫ বছর মেয়াদী মিত্রতা চুক্তি স্বাক্ষর করেন যাতে অর্থনৈতিক ও মানব সম্পদ উন্নয়নে ব্যাপক সাহায্যের আশ্বাস দেয়া হয়। চুক্তিতে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী ও সরকারী কর্কমর্তাদের প্রশিক্ষণের শর্ত অন্তর্ভুত ছিল। [১৩]মুজিব ইন্দিরা গান্ধির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখেন। [১২]মুজিবের জীবদ্দশায় দুই সরকারের মধ্যে পারষ্পরিক সমঝোতা ছিল।[১৪] মুজিব তার অন্তর্বর্তী সংসদকে একটি নতুন সংবিধান রচনার দায়িত্ব দেন এবং চারটি মূলনীতি হিসেবে “জাতীয়তাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্র” ঘোষণা করেন যা মুজিববাদ নামেও পরিচিত। [১৪]মুজিব শতাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও কোম্পানি রাষ্ট্রীয়করণ করেন এবং ভূমি ও মূলধন বাজেয়াপ্ত করে ভূমি পূনর্বণ্টনের মাধ্যমে কৃষকদের সাহায্যের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। [১৫]মুক্তিযুদ্ধ কালে ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী ১ কোটি শরণার্থীর পূনর্বাসনের জন্য বড় পদক্ষেপ নেয়া হয়। এর ফলে অর্থনৈতিক সংকট হ্রাস পেতে শুরু করে এবং সমূহ দুর্ভিক্ষ এড়ানো সম্ভব হয়। [১৬]১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর থেকে নতুন সংবিধান কার্যকর করা হয় এবং ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় সংসদ নির্বাচনঅনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে শেখ মুজিব ও তাঁর দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং তিনি বাংলাদেশের প্রথম নির্বাচিত সরকার গঠন করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, পানি ও বিদ্যুত সরবরাহ নিশ্চিতকল্পে রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের বিস্তৃতি ঘটান। ১৯৭৩ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চ বার্ষিক উন্নয়ন পরিকল্পনায় কৃষি, গ্রামীণ অবকাঠামো ও কুটির শিল্প উন্নয়নে প্রাগ্রাধিকারমূলক সরকারী অর্থ বরাদ্দের নির্দেশ দেয়া হয়।[১৭] ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা থাকা স্বত্ত্বেও মুজিব ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ইসলামি অনুশাসনের পথে অগ্রসর হন। [১৮]তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর সাথে আঁতাতের অভিযোগে ১৯৭২ সালে নিষিদ্ধ ঘোষিত ইসলামিক একাডেমি পুনরায় চালু করেন। ইসলামিক গোত্রগুলোর জোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মদ তৈরি ও বিপণন এবং জুয়া খেলা নিষিদ্ধ করেন। [১৮]তাঁরই সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশঅর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কনফারেন্সও ইসলামিক ডেভেলপমেণ্ট ব্যাংক-এর সদস্যপদ গ্রহণ করে। মুজিব ১৯৭৪ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ওআইসি সম্মেলনে যোগ দিতে যান যা পাকিস্তানের সাথে কিছুমাত্রায় সম্পর্ক উন্নয়ন ও পাকিস্তানের স্বীকৃতি পেতে সহায়তা করে। [১৮]জনসাধারণের সামনে উপস্থিতি ও ভাষণের সময় শেখ মুজিব ইসলামিক সম্ভাষণ ও শ্লোগান ব্যবহার বাড়িয়ে দেন এবং ইসলামিক আদর্শের উল্লেখ করতে থাকেন। শেষ বছরগুলোতে মুজিব তাঁর স্বভাবসুলভ “জয় বাংলা” অভিবাদনের বদলে ধার্মিক মুসলিমদের পছন্দনীয় “খোদা হাফেজ” বলতেন।
শেখ মুজিবুর রহমান (পর্ব ৫): উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান[সম্পাদনা] এই বিষয়ে মূল নিবন্ধের জন্য দেখুন:উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান বিচারকার্য চলাকালীন সময়ে১৯৬৯সালেরজানুয়ারি ৫তারিখেকেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদতাদেরএগার দফাদাবী পেশ করে যার মধ্যে শেখ মুজিবের ছয় দফার সবগুলোই দফাই অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই পরিষদের সিদ্ধান্তক্রমে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহারের দাবীতে দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের প্রস্তুতি গৃহীত হয়। এই সংগ্রাম এক সময় গণ আন্দোলনে রূপ নেয়। এই গণ আন্দোলনই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান নামে পরিচিত। মাসব্যাপী প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আন্দোলন, ১৪৪ ধারা ভঙ্গ, কারফিউ, পুলিশের গুলিবর্ষণ এবং বেশ কিছু হতাহতের পর আন্দোলন চরম রূপ ধারণ করলে পাকিস্তান সরকার ছাড় দিতে বাধ্য হয়। তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খানরাজনৈতিক নেতাদের সাথে এক গোলটেবিল বৈঠকের পর এই মামলা প্রত্যাহার করে নেন। এর সাথে শেখ মুজিবসহ অভিযুক্ত সকলকে মুক্তি দেয়া হয়। কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ এই বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারিতারিখে শেখ মুজিবের সম্মানে ঢাকাররেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানেসোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক সভার আয়োজন করে। লাখো জনতার এই সম্মেলনে শেখ মুজিবকে"বঙ্গবন্ধু"উপাধি প্রদান করা হয়। উপাধি প্রদানের ঘোষণা দিয়েছিলেন জনাব তোফায়েল আহমেদ। এই সভায় রাখা বক্তৃতায় শেখ মুজিব ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের এগার দফা দাবীর পক্ষে তার পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করেন। ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের আহ্বানে অনুষ্ঠিত একটি সর্বদলীয় সম্মেলনে মুজিব তাঁর ছয়-দফাসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের চাহিদাগুলো মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান এবং তা প্রত্যাখ্যাত হলে সম্মেলন থেকে বের হয়ে আসেন। ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় মুজিব ঘোষণা করেন যে এখন থেকে পূর্ব পাকিস্তানকে"বাংলাদেশ"নামে অভিহিত করা হবে: "একটা সময় ছিল যখন এই মাটি আর মানচিত্র থেকে"বাংলা"শব্দটি মুছে ফেলার সব ধরণের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল।"বাংলা"শব্দটির অস্তিত্ব শুধু বঙ্গোপসাগর ছাড়া আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যেত না। আমি পাকিস্তানের পক্ষ থেকে আজ ঘোষণা করছি যে, এখন থেকে এই দেশকে' পূর্ব পাকিস্তানের'বদলে'বাংলাদেশ'ডাকা হবে"।[৪] মুজিবের এই ঘোষণার ফলে সারা দেশে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ এবং সামরিক কর্তারা তাঁকে একজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা হিসেবে মূল্যায়িত করতে শুরু করেন। মুজিবের বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতিগত আত্মপরিচয়ের বহিঃপ্রকাশ প্রাদেশিক স্বায়ত্বশাসনের বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করে। অনেক বুদ্ধিজীবি ব্যক্তিত্ব্যের মতে, বাঙালিদের আন্দোলন দ্বিজাতিতত্ত্বকে অস্বীকার করার নামান্তর। এই দ্বিজাতিতত্ত্বের মাধ্যমেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। বাঙালিদের জাতিগত ও সংস্কৃতিগত এই আত্মপরিচয় তাদেরকে একটি আলাদা জাতিসত্ত্বা প্রদান করে। [৮]মুজিব পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলতে সমর্থ হন এবং কার্যত ভারতীয় উপমহাদেশের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন। ১৯৭০ এর নির্বাচন ও স্বাধীনতা যুদ্ধ [সম্পাদনা] ১৯৭০ সালের নির্বাচনে শেখ মুজিবের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ প্রাদেশিক আইনসভায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে।[২]পূর্ব পাকিস্তানের কোটার ২ টি আসন ছাড়া বাকি সবগুলোতে জয়ী হওয়ার জন্য জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাও অর্জন করে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের ফলাফল পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে মেরুকরণ সৃষ্টি করে। পশ্চিম পাকিস্তানের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের নেতা জুলফিকার আলি ভুট্টো, মুজিবের স্বায়ত্বশাসনের নীতির প্রবল বিরোধীতা করেন। ভুট্টো এ্যাসেম্বলি বয়কট করার হুমকি দিয়ে ঘোষণা দেন যে, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান মুজিবকে সরকার গঠনের জন্য আহ্বান জানালে তিনি সে সরকারকে মেনে নেবেন না। রাজনৈতিক অস্থিশীলতার মধ্যে ইয়াহিয়া খান সংসদ ডাকতে দেরি করছিলেন। বাঙালিরা এতে বুঝে ফেলে যে, মুজিবের দলকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও সরকার গঠন করতে দেয়া হবে না। [৫]১৯৭১ সালের৭ মার্চরেসকোর্স ময়দানে এক জনসভায় শেখ মুজিব স্বাধীনতার ডাক দেন এবং জনগণকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করেন। ইয়াহিয়া খান সামরিক আইন জারি করেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন এবং মুজিবসহ আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেন। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী রাজনৈতিক ও জনসাধারণের অসন্তোষ দমনে ২৫ মার্চ অপারেশন সার্চলাইটশুরু করে। সামরিক বাহিনীর অভিযান শুরু হলে মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। [৯][৪]মূল ঘোষণার অনুবাদ নিম্নরূপ: "এটাই হয়ত আমার শেষ বার্তা, আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। আমি বাংলাদেশের মানুষকে আহ্বান জানাই, আপনারা যেখানেই থাকুন, আপনাদের সর্বস্ব দিয়ে দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যান। বাংলাদেশের মাটি থেকে সর্বশেষ পাকিস্তানি সৈন্যটিকে উত্খাত করা এবং চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের আগ পর্যন্ত আপনাদের যুদ্ধ অব্যাহত থাকুক"। মুজিবকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফয়সালাবাদের একটি জেলে কড়া নিরাপত্তায় রাখা হয়। পাকিস্তানি জেনারেল রহিমুদ্দিন খান মুজিবের মামলার পরিচালনা করেন। মামলার আসল কার্যপ্রণালী এবং রায় কখনোই জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয় নি। [২]এ মামলাটি"লায়ালপুর ট্রায়াল"হিসাবে অভিহিত। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরিচালিত অভিযান অল্প সময়ের মধ্যেই হিংস্রতা ও তীব্র রক্তপাতে রূপ নেয়। রাজাকারদের সহায়তায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী বাঙালি বুদ্ধিজীবি, রাজনীতিবিদ ও ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষকে আক্রমণ করে। বাঙালি ও অবাঙালি হিন্দুদেরকে লক্ষ্য করে বিশেষ অভিযানের কারণে সারা বছরজুড়ে প্রচুর হিন্দু জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী পশ্চিম বঙ্গ, আসাম ও ত্রিপুরায় আশ্রয় গ্রহণ করে।
Subscribe to:
Posts (Atom)